The Business Insider

ডিম উৎপাদনে বাংলাদেশকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে কাজ করছে নাবিল গ্রুপ

Nabil Group

দেশের উত্তরাঞ্চলে কৃষি শিল্পে নেতৃত্ব দানকারী প্রতিষ্ঠান নাবিল গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ দেড় যুগ ধরে খাদ্য পণ্য উৎপাদন, বিপণন ও সরবরাহের ক্ষেত্রে ব্যাপক অবদান রেখে চলেছে। ফ্লাওয়ার মিল, রাইসমিল, ডাল মিল, ফিড মিল, কোল্ড স্টোরেজ, লেয়ার ফার্ম, ক্যাটল ফার্মিং, ট্রেডিং, জুট মিল, সীড ও টিস্যু কালচারসহ মোট ২২টি প্রতিষ্ঠান নিয়ে দেশের অর্থনীতিতে বিশেষ ভূমিকা রাখছে এই কোম্পানি। ইতিমধ্যেই ডিম বিক্রিতে শীর্ষ প্রতিষ্ঠান হিসেবে নাবিল গ্রুপ বিশেষ সুনাম অর্জন করেছে। 

যেভাবে ডিম বিক্রিতে শীর্ষে নাবিল গ্রুপ

ডিম উৎপাদনে বাংলাদেশকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে কাজ করছে নাবিল গ্রুপের ডিম উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান নাবা পোল্ট্রি ফার্ম। ফার্মটির অবস্থান রাজশাহী জেলার গোদাগাড়ি উপজেলার অন্তর্গত কাকনহাট পৌরসভায়। প্রতিদিন ৭ লাখ ৫০ হাজার পিস ডিম উৎপাদন করছে ফার্মটি। যার বাৎসরিক পরিমাণ সাতাইশ কোটি পিস ডিম। উত্তরবঙ্গের এই প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকেই প্রতিদিন সারাদেশে বিপুল পরিমাণ ডিমের যোগান দেয় তারা। প্রতিষ্ঠানটি জানায়, তাদের ভবিষ্যত লক্ষ্যমাত্রা প্রতিদিন ১৪ লাখ পিস ডিম উৎপাদন করা। যা তাদের বর্তমান উৎপাদনের প্রায় দ্বিগুণ!

যেভাবে ডিম সাপ্লাইয়ের কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়

সারাদেশে ডিম সাপ্লাইয়ের প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানতে চাইলে নাবা ফার্মের রিজিওনাল সেলস ম্যানেজার মো. বেলাল হোসেন জানান, তাদের নিজস্ব সফটওয়্যারের মাধ্যমে তারা দেশব্যাপী ডিম সাপ্লাইয়ের কার্যক্রম পরিচালনা করেন। সফটওয়্যারে ডিমের ডিলারদের নাম ও ফোন নাম্বার তালিকাভুক্ত রয়েছে। প্রতিদিন ডিমের ধরন ও পরিমানসহ বিস্তারিত বার্তা ডিলারদের ফোনে পৌছে যায়। তারা অর্ডার কনফার্ম করলে পরিমান এবং কোয়ালিটি চেক করে নিশ্চিত হওয়ার পর পরিবহনের মাধ্যমে  দেশের বিভিন্ন জেলায় থাকা ডিলারদের নিকট পৌছে যায়। এরপর ক্রমান্বয়ে পাইকারি বিক্রেতা, স্থানীয় বাজার বা দোকানের মাধ্যমে সাধারণ ক্রেতাদের হাতে পৌছে যায় তাদের উৎপাদিত ডিম। এভাবেই দীর্ঘদিন যাবত অত্যন্ত সুচারুভাবে ডিম বিক্রির কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে নাবিল গ্রুপ।

বর্তমান কার্যক্রম ও ভবিষ্যত পরিকল্পনা

ডিম উৎপাদনে বাংলাদেশকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করার লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ করে যাওয়া নাবিল গ্রুপের ডিম উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান নাবা পোল্ট্রি ফার্ম ইতিমধ্যেই সারাদেশে ডিমের বিরাট চাহিদা পূরণ করছে। রাজশাহী,চাপাইনবাবগঞ্জ, নাটোর, বগুড়া, খুলনা, চট্টগ্রাম, সিলেট ও ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় প্রতিদিন ডিমের যোগান দিচ্ছে তারা। প্রতিদিন ৭ লাখ ৫০ হাজার পিস ডিম উৎপাদন করছে ফার্মটি। যার বাৎসরিক পরিমাণ সাতাইশ কোটি পিস ডিম। ভবিষ্যত পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চাইলে নাবা ফার্মের রিজিওনাল সেলস ম্যানেজার মো. বেলাল হোসেন বলেন, ডিম উৎপাদনে আমাদের ভবিষ্যত লক্ষ্যমাত্রা প্রতিদিন ১৪ লাখ পিস ডিম উৎপাদন করা। অর্থাৎ বর্তমান উৎপাদনের প্রায় দ্বিগুণ! সে লক্ষ্যমাত্রা পূরণে আমরা প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছি। আশা করছি শিগগিরই আমরা আমাদের লক্ষ্য বাস্তবায়ন করবো।

প্রসঙ্গত,নাবিল গ্রুপ বর্তমানে বাংলাদেশের  ফুড-কমোডিটি ইন্ডাস্ট্রিতে একটি দ্রুত বর্ধনশীল কোম্পানি। দেশের উত্তরাঞ্চলে কৃষি শিল্পে নেতৃত্ব দানকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে নাবিল গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ  দেড় যুগ ধরে খাদ্য পণ্য উৎপাদন, বিপণন ও সরবরাহের ক্ষেত্রে ব্যাপক অবদান রেখে চলেছে। ফ্লাওয়ার মিল, রাইসমিল, ডাল মিল, ফিড মিল, কোল্ড স্টোরেজ, লেয়ার ফার্ম, ক্যাটল ফার্মিং, ট্রেডিং, জুট মিল, সীড ও টিস্যু কালচারসহ মোট ২২টি প্রতিষ্ঠান নিয়ে দেশের অর্থনীতিতে বিশেষ ভূমিকা রাখছে এই কোম্পানি। দেশের উন্নয়নশীল অর্থনীতিতে কৃষি পণ্য আমদানি, উৎপাদন ও বিপনণে কোম্পানিটি দৃঢ় ভূমিকা পালন করেছে। বর্তমানে চারটি মৌলিক খাতে নিজেদের কার্যক্রম পরিচালনা করতে সক্ষম হয়েছে তারা। যেগুলো হলো- ট্রেড ভেঞ্চারস, সার্ভিস ভেঞ্চারস, এগ্রো ও ফুড এন্ড বেভারেজেস। এরই পরিপ্রেক্ষিতে নাবিল গ্রুপ হয়ে উঠেছে দেশের শীর্ষ আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে অন্যতম। ইতিমধ্যেই ব্যবসায়িক সম্পর্ক স্থাপন করেছে রাশিয়া, ইউক্রেন, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র, ব্রাজিল, উরুগুয়ে, মায়ানমার এবং ভারতের মতো দেশের সঙ্গে। এছাড়াও নাবিল গ্রুপ আমদানি করছে কয়লা, চুনাপাথর এবং বেলেপাথর।

রাজশাহীর পবা উপজেলার দাওকান্দি গ্রামে অবস্থিত নাবিল ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে রয়েছে নাবিল রাইস মিল, ফ্লাওয়ার মিল এবং ডাল মিল। যা বাংলাদেশের মানুষের প্রতিদিনের সুষম খাদ্যের চাহিদা মেটাতে নিরবিচ্ছিন্নভাবে কাজ করে যাচ্ছে। গবাদী পশু খাতেও রয়েছে তাদের অবদান । রাজশাহীর পবা উপজেলার মাহিন্দ্র গ্রামে নাবিল গ্রুপ প্রতিষ্ঠা করেছে নাবা ডেইরি অ্যান্ড  ক্যাটেল ফার্ম। যেখানে রয়েছে ২৫০০ এর বেশি উন্নত জাতের গরু। যা দেশের মানুষের মাংস, দুধ এবং দইয়ের চাহিদা মেটাতে কাজ করে যাচ্ছে।

কৃষিখাতে স্বনির্ভর বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে নাবিল গ্রুপের গবেষনা দল নিজস্ব গবেষনাগারে ভুট্টা, টমেটো, বেগুন ও মটরশুটিসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্যকর সবজির উন্নত বীজ তৈরিতে কাজ করে যাচ্ছে। এছাড়াও উন্নত বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে তারা তৈরি করেছে উন্নত প্রযুক্তির এগ্রিকালচার গ্রিন হাউজ। যা একটি পরিচ্ছন্ন, স্বনির্ভর ও ইকো ফ্রেন্ডলি বাংলাদেশ উপহার দিতে বিশেষ ভূমিকা রাখবে।

পথচলার প্রায় দুই দশকে পণ্যের গুনগত মান ছিল নাবিল গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের প্রধান শক্তি। যা স্বাস্থ্যকর বাংলাদেশ গড়তে এবং বাংলাদেশের কৃষি খাতকে বহুদূর নিয়ে যাবে। সেইসাথে তাদের লক্ষ্য মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা এবং অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো। নাবিল গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. জাহান বক্স মন্ডল বলেন, ‘নাবিল গ্রুপে প্রায় ছয়হাজার মানুষ কাজ করছেন। প্রত্যেকের বেতন-ভাতা মাসের ৩০-১ তারিখের মধ্যেই প্রদান করা হয়। তাদের স্বাস্থসেবা নিশ্চিত করতে একজন এমবিবিএস ডাক্তার  সার্বক্ষণিক নিয়োজিত থাকেন। এছাড়াও অসহায়-গরিবদের জন্য আমাদের সহায়তা ফান্ড রয়েছে। যে ফান্ড থেকে এলাকার অসহায় মানুষের চিকিৎসা, বিবাহসহ নানারকম সহায়তা আমরা করে থাকি। সম্প্রতি বন্যায় আমরা অসংখ্য বন্যার্ত  মানুষের পাশে ত্রাণ-সহায়তা পৌঁছে দিয়েছি। সকলের দোয়া এবং সহযোগিতায় আমরা বহুদূর এগিয়ে যেতে চাই।” 

By admin

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *